হাসিনার কাছে ‘অবহেলিত’ ছিলেন সুলতান মনসুর!


FavIcon
নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত : ০১ অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
ছবির ক্যাপশন: ad728

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৮ এর পর থেকে গত ২০ বছর তাঁকে কোনো পদ–পদবিতে রাখেননি বলে আদালতে দাবি করেছেন ডাকসুর সাবেক ভিপি সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ। সোমবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাগীব নূরের আদালতে রিমান্ড শুনানিতে এ কথা বলেন তিনি। 





গত বছর ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশে যুবদল নেতা শামীম হত্যা মামলায় রিমান্ড শুনানি হয়। আদালতে নিজের কোনো আইনজীবী না থাকায় সুলতান মনসুর স্বপক্ষে কথা বলেন। এর আগে তাঁর নামে কখনো কোনো মামলা হয়নি বলেও জানান সাবেক এই আওয়ামী লীগ নেতা। 

 



এদিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পল্টন মডেল থানার সাব-ইন্সপেক্টর তন্ময় কুমার বিশ্বাস সুলতান মনসুর আহমেদকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষও তাঁর ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থণা করে। বিএনপিপন্থী আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন। পরে আদালত তাঁর ৫ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।

 



আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী শুনানিতে বলেন, ‘সুলতান মনসুর ডাকসুর সাবেক ভিপি। সারাজীবন বেঈমানীর রাজনীতি করেছেন। শেখ হাসিনা তাঁকে ডাকসুর ভিপি করেন। হাসিনার সঙ্গে তিনি বেঈমানী করেন। লাস্ট বেঈমানী করেছেন ২০১৮ সালে। তাঁকে ধানের শীষ দেওয়া হয়। নির্বাচিত হওয়ার পর আরেক বেঈমানী করেন। আবার আসেন শেখ হাসিনার কাছে।’

 


এই আইনজীবী বলেন, ‘গত বছর ২৮ অক্টোবর বিএনপির বৃহৎ মহাসমাবেশ হয়। সেখানে যুবলীগ, ছাত্রলীগ, পুলিশ গুলি চালায়। হাজার হাজার নেতাকর্মী আক্রান্ত হয়। যুবদল নেতা শামীম মারা যায়। এ ঘটনায় এ আসামি প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। তাঁর ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থণা করছি।’


 


তবে মনসুর আহমেদের পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। আদালত তাঁর বক্তব্য শুনতে চান।



 

এসময় মনসুর আহমেদ আদালতকে বলেন, ‘মামলার ঘটনার সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নাই। আমার বড় মেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করে ঢাকা শাহিন কলেজের টিচার। মেজ মেয়ে কানাডার অটোয়াতে থাকে। আর ছোট মেয়ে ব্যারিস্টার। আমার মেজ মেয়ে সন্তান সম্ভবা। তাঁকে দেখতে ১০ মে কানাডা যাই। সেখান থেকে নিকটবর্তী দেশ আমেরিকায় গিয়েছিলাম আমার ভাইয়ের দুই ছেলে থাকে সেখানে; তাদের দেখতে।’


 

সুলতান মনসুর আরও বলেন, ‘১৯৬৮ সালে আইয়ুব বিরোধী থেকে আন্দোলন শুরু করি। রাজনীতির ৫৫ বছর হতে যাচ্ছে। ১৯৭০ এর নির্বাচনে, ’৭১ এর স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছি। এরশাদের স্বৈরাশাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি। ডাকসুর নির্বাচনে জয়ী হই। এ নিয়ে খালেদা জিয়ার সঙ্গেও বৈঠক হয়। ১৯৯৬–এ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে মৌলভীবাজার-২ থেকে নির্বাচিত হই।  ২০০৮ এর পর থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা; যিনি দেশত্যাগ করেছেন নেতাকর্মীদের রেখে, তিনি ২০ বছর আমাকে কোনো পদ–পদবিতে রাখেননি।’

 
 

ডাকসুর সাবেক এ নেতা বলেন, ‘২০১৮ সালে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে যোগ দিই। ধানের শীষ নিয়ে ২০১৮ সালে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে জয়ী হই। আমাদের সব প্রোগ্রাম কামাল হোসেন ঠিক করে দেন। আমাকে ফোন দিয়ে সংসদে যোগদান করতে বলেন। যে সময় কোটা আন্দোলন তখন দেশের বাইরে ছিলাম। ২০১৮ সালে কোটা বাতিলে সংসদে ইতিবাচক ভূমিকা রাখি।’

 


বর্ষীয়ান এই নেতা বলেন, ‘আমি হার্টের রোগী। ২০১২–এ হার্টে তিনটা রিং বসানো হয়। দুই বেলা ওষুধ খেতে হয়। আর আমাকে বিদেশ যাওয়ার সময় নয়, আসার সময় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। চাইলে ৫/৬ বছর না এসেও থাকতে পারতাম। খুন, দুর্নীতি, অন্যায়ের সঙ্গে জড়িত নই। সবাই যেভাবে দেশ নিয়ে ভাবে, আমিও ভাবি। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমাকে গ্রেপ্তার করানো হয়েছে। এরআগে একটা মামলাও নেই আমার বিরুদ্ধে। আদালতের কাছে সুবিচার চাই।’

 

 

এরআগে আজ ভোরে কানাডা থেকে দেশে ফেরার পর ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন থেকে সুলতান মনসুরকে হেফাজতে নেয় পুলিশ।

 

 

 

 

আলোচিত শীর্ষ ১০ সংবাদ